শিশুর টিকা

শিশুকে সঠিক সময়ে সব টিকা দিন। সরকার বছরে এক দিন জাতীয় টিকাদান দিবস হিসেবে পালন করে। আরো এক দিন বাড়তি রাখা হয়। কোন টিকা কোন সময়ে দিতে হবে জেনে নিন।

                 

বিসিজি টিকা:

শিশুর জন্মের দিনই দিতে হবে এ টিকা। একবারই দেওয়া হয় অর্থাৎ ডোজ একটিই। বাঁ হাতের কাঁধের কাছের হাতের অংশের চামড়ার নিচে এটি দেওয়া হয়। এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। যেমন- ক্ষত হওয়া, লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।

 

পোলিও টিকা:

পোলিও মুখে খাওয়ানো হয়। এর সঙ্গে ভিটামিন '' ক্যাপসুলও খেতে দেওয়া হয় শিশুকে। এর ডোজ চারটি। ৬, ১০, ১৪ সপ্তাহ, নবম মাস।

 

এমএমআর টিকা (মাম্পস, মিজলস, রুবেলা):

ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এর মধ্যে মিজলস বা হামের টিকা দিতে হবে নবম মাসে। ৪ থেকে ৬ বছরে একটি বুস্টার ডোজ দিতে হবে। এর খুবই বিরল কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। অ্যালার্জি, চামড়ায় র‌্যাশ হওয়া, টিকা স্থানে ব্যথা ও লাল হওয়া এবং ফুলে যাওয়া।

 

ডিপথেরিয়া, টিটেনাস ও পারটুসিস:

তিনটি ডোজ- ৬, ১০ ও ১৪তম সপ্তাহে। পারটুসিস (হুপিং কাশি) টিকা দেওয়ায় অনেকে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। যাদের এ প্রবণতা বেশি বা শরীর দুর্বল তাদের শুধু ডিপথেরিয়া ও টিটেনাসের টিকা দেওয়া হয়। টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কারের টিকাটি শিশুদের জন্য খুবই জরুরি।

 

হেপাটাইটিস বি ও হিব টিকা:

, ১০ ও ১৪ সপ্তাহের মধ্যে এই তিনটি ডোজ দিতে হবে। হেপাটাইটিস টিকা পরে লিভার ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করে। আর হিব টিকা নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিসকে প্রতিরোধ করে।

 

ডায়রিয়া:

বাচ্চাদের ডায়রিয়ার প্রধান কারণ রোটা ভাইরাস। রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক দিতে হবে। প্রতিবছর অনেক শিশু এ ভাইরাসের ইনফেকশনে মারা যায়। ডায়রিয়া প্রতিষেধকের টিকা তিনটি ডোজ। প্রথম ডোজ ৬ থেকে ১২ সপ্তাহে এবং পরবর্তী ডোজগুলো ৪ থেকে ১০ সপ্তাহ পর পর ও শেষ ডোজ অবশ্যই ৩২ সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। এ তিনটি টিকাই মুখে খাওয়ার।

 

নিউমোনিয়া:

শিশুদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ টিকা নিউমোনিয়া। বর্তমানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নিউমোনিয়া বা অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনকে শিশুমৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী ভাইরাস হল নিউমোকক্কাস (স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি) ও হেমোফাইলাস ইনয়ুযেকি। এই দুই ভাইরাসকে ধরাশায়ী করতে টিকাদানের বিকল্প নেই। এজন্য সিজনাল অ্যান্টি ভাইরাল ভ্যাকসিন বা নিউমোকক্কাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন যে কোনোটি দিলেই হয়। নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের সংক্রমণ রোধে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের শিশুদের টিকা দিতে হয়। নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন দেয়া থাকলে ফুসফুসের সংক্রমণের তীব্রতা কম হয় এবং ঝুঁকি কম থাকে।