হবু মায়েদের ঈদকে স্মরণীয় করে রাখার ৫টি টিপস


ঈদ তো ঈদ-ই। তার সাথে যদি যোগ হয় মা হতে চলার আনন্দ, এর কি কোনও তুলনা আছে? হতে পারে আপনি কিছুটা শারীরিক অস্বস্তি বোধ করছেন। কিন্তু তাই বলে কি এবারের ঈদটাকে আর দশটা ঈদের দিনের মত শেষ হয়ে যেতে দেবেন?

মোটেই না! বরং চলুন দেখে নেই এবারের ঈদটাকে সারাজীবন মনে রাখার মতো দিন করে তোলার জন্য অভিনব ৫টি উপায়।

১) প্রিয়জনের সাথে কাজ শেয়ার করুনঃ

ঈদ মানে শপিং, বাজার করা, ঘর গোছানো, রান্না করা, আরও কত কি। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় এত ধকল তো আর নিতে পারবেন না। উপায় হচ্ছে আপনজনের সাথে শেয়ার করা।

এবারের ঈদে ঘর গোছানো আর রান্নার কাজ হাসবেন্ড-ওয়াইফ মিলে মিশে করুন। এতে কতটা আন্তরিকতা বাড়বে তা চিন্তাও করতে পারবেন না। দুজনে মিলে কাজ করুন আর স্মৃতিগুলো ছবিতে ধরে রাখুন। ফেসবুকে শেয়ার করতেই বা ক্ষতি কি?

অনেক বছর পরেও যখন এই ছবিগুলো দেখবেন, তখন মনে পড়বে সুখের এই মুহূর্তগুলোর কথা। আপনার সন্তানও দেখবে তার বাবা-মায়ের বন্ধন কতটাই দৃঢ়।

শপিং-এর দায়িত্ব যতটা সম্ভব ছেড়ে দিন আপনজনের ওপর। এছাড়া অনলাইন শপিং তো আছেই।

২) সারপ্রাইজ সারপ্রাইজ!

এমন হতেও তো পারে যে আপনি খুব রিসেন্টলি প্রেগন্যান্সির কথা বুঝতে পেরেছেন, আপনজন সবাইকে জানানোও হয়নি। তাহলে এখনি জানানোর লোভ সামলে ফেলুন। চলুন ঈদের দিনের জন্য দারুণ একটা সারপ্রাইজ প্ল্যান করা যাক।

ঈদের দিনে আপনজনদের সাথে দেখা নিশ্চয়ই হচ্ছে? তাহলে গ্রুপফটোতে সবাইকে রেডি করুন। ক্লিক করার ঠিক আগে বলুন যে আপনি মা হতে চলেছেন। ভাবুন তো তাদের সারপ্রাইজড আর এক্সাইটেড মুখগুলোর কথা। এমন ছবি সহজে আরেকটা খুঁজে পাবেন?

অথবা যদি এমন হয় যে গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা মাত্রই জানলেন।তাহলে এটাও রেখে দিন সারপ্রাইজ দেবার জন্য।

একটা কেক অর্ডার করুন, যার ভেতরটা হবে গোলাপি অথবা নীল(বাচ্চার জেন্ডার বুঝে), আর বাইরের লেয়ারটা অন্য রঙের।

গেস্ট সবাইকে বলুন যে বাচ্চা ছেলে না মেয়ে তা জানতে গেলে কেক কাটতে হবে। এবার কেক কাটার আগ পর্যন্ত সবার এক্সাইটমেন্ট উপভোগ করুন। কিছুতেই আগে থেকে বলবেন না ছেলে নাকি মেয়ে। মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধরে রাখতে ভুলবেন না আবার!

৩) একটা ফটো জার্নাল মেইনটেইন করুন

প্রেগন্যান্সির এই সুখস্মৃতিগুলো ধরে রাখার জন্য এখনও যদি এটি করে না থাকেন, তবে এখনি শুরু করুন।

গিফটশপ অথবা লাইব্রেরিগুলোতে এ ধরণের জার্নাল পাবেন। খুঁজে না পেলে একটা ফটো এলবাম নিয়েও করতে পারেন।

কবে প্রথম প্রেগন্যান্সির কথা জানতে পারলেন, কবে আপনার মাঝে ওর নড়াচড়া টের পেলেন, এসব নোট করে রাখুন। এবারের ঈদের সব স্মৃতিগুলোও গুছিয়ে রাখুন এতে।

আর অনাগত সন্তানের উদ্দেশ্যে দুজনে মিলে চিঠি লিখুন। বড় হয়ে ও যেন দেখতে পারে তার আসার উপলক্ষে আপনারা কত আনন্দিত ছিলেন।

৪) ঈদের আনন্দ ভাগ করুন সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের সাথে

ভাবুনতো একবার, আপনার সন্তান পৃথিবীতে আসার আগে থেকেই কত ভালবাসা পেয়ে আসছে আপনাদের। কিন্তু যারা অনাথ, অথবা পথশিশু, তাদের ঈদ কেমন যাবে?

এবারের ঈদের ছুটিতে দুজনে মিলে একবেলা বেড়িয়ে পড়ুন এসব শিশুদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। আপনার আশেপাশেই আছে অনাথ আশ্রম অথবা বাস-রেলস্টেশন।

অসহায় এসব বাচ্চাদের মুখের হাসি ফোটাতে আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হবেনা। কিন্তু এদের হাসি আপনার মনকে অনেক অনেক ভাল করে দেবে। জানেনই তো, মায়ের মন ভাল থাকাটা গর্ভের সন্তানের জন্য অনেক ভাল।

৫) এক্সপার্ট টিপস – সতর্ক থাকুন

প্রেগন্যান্ট অবস্থায় আপনার কিছু দুর্বলতা-অস্বস্তি থাকবেই। তাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে একটু বুঝে চলতেই হবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেবেন। গরমের সিজন তাই পানি খাবেন একটু পর পর। ভারি খাবার এড়িয়ে চলবেন।

আপনার ডাক্তারের সাথে আগে থেকেই কথা বলে রাখুন, যাতে ঈদের ছুটিতে প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করতে পারেন।

আপনার কথা

প্রেগন্যান্ট বলেই ঈদের আনন্দ-উচ্ছাস করা যাবেনা এমন তো আর না। দেখলেন তো, এবারের ঈদটাকে আপনার জীবনে সত্যিই স্পেশাল করে তোলার জন্য উপায় আছে অনেক। তবে নিজেকে বেশি ধকল দেবেন না, সাবধানে থাকবেন।

আমাদের এই আইডিয়াগুলো কেমন লাগল তা জানাবেন। আর এবারের ঈদকে আরো আনন্দময় করে তোলার জন্য আপনার কোন টিপস আছে কি? থাকলে কমেন্ট করে জানান সুপারমমদের সবাইকে। আমরাও আপনার কাছ থেকে জানতে চাই।

ঈদ মোবারক! বেবি মোবারক!