গর্ভকালীন বিপদচিহ্নঃ পেট ব্যাথার সাথে এই লক্ষণগুলো উপেক্ষা করবেন না।

গর্ভাবস্থায় মায়েদের পেট ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়, বেশ স্বাভাবিক ব্যপার। কারণ এসময়ে নারীদের দেহের অনেক অঙ্গের মাঝে পরিবর্তন ঘটে, জরায়ু আকারে বড় হয়ে যায়, লিগামেন্ট টান টান হয়ে যায়। এছাড়া সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মর্নিং সিকনেস তো আছেই। কিন্তু যখন এই ব্যথা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, তখন অবশ্যই চিন্তার কারণ রয়েছে ও সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথার কিছু স্বাভাবিক কারণ

  • ·        জরায়ুর আকার বড় হয়ে যাওয়া
  • ·        লিগামেন্টের ব্যথা
  • ·        কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস

এরকম কারণে পেটে ব্যথা হলে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু এখন আমরা যে কারণগুলো বলতে যাচ্ছি, সেগুলোর কোনটা আপনার মাঝে বর্তমান থাকলে, যদি আপনি সন্তান সম্ভবা হয়ে থাকেন তবে আপনার অবশ্যই এগুলোর ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে।

Ectopic pregnancy

এ সমস্যাটি তখনোই হয়, যখন শিশুর ভ্রূণ মায়ের জরায়ুতে বড় না হয়ে মায়ের ফেলোপিয়ান টিউবের মাঝে বড় হতে শুরু করে। যদি গর্ভাধারণে ৬ ষ্ঠ থেকে ১০ ম সপ্তাহের মাঝে কোন মা পেটে প্রচন্ড ব্যথা এবং রক্ত যেতে দেখেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে তার ফেলোপিয়ান টিউব ফুলে গেছে। এরকম হলে অপেক্ষা না করে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

অকাল গর্ভাপাত বা মিসক্যারিজ

যদি গর্ভাধারণের প্রথম তিন মাসের মাঝে পেটে প্রচন্ড ব্যথা হয়, তবে তা মিস ক্যারেজ বা অকাল গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। মিস ক্যারেজ হওয়ার লক্ষণ গুলো হচ্ছে রক্তপাত এবং পেটে মোচড় দেয়া, যা মেয়েদের পিরিয়ডের সময়ও হয়ে থাকে।

ভ্রূণীয় আবরণ বা প্লাসেন্টা ফেটে যাওয়া

প্লাসেন্টা বা অমরা হচ্ছে গর্ভস্থ শিশুর জন্য অক্সিজেন ও পুষ্টির উৎস। অমরা সাধারণতা জরায়ুর উপরের স্তরের সাথে যুক্ত থাকে ও শিশুর জন্মের পর এটা আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মাথায় অমরা জরায়ুর গা থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারে, যা থেকে হতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। জরায়ু খুবই শক্ত হয়ে যায় এবং কালো লাল রঙের রক্ত বের হতে পারে যোনি দিয়ে, যা সহজে জমাট বাঁধে না। এক্ষেত্রে হয়তো সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চাকে জন্ম দেয়াতে হবে। তবে এ ঝুঁকি তাদেরই বেশি যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে।

মূত্রনালী বা প্রস্রাবের রাস্তায় সংক্রমণ

এটাকে ইউরিনারি ট্র্যক্ট সংক্রমণ বলা হয়। এর লক্ষণগুলো হচ্ছে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ পাওয়া, প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া অনুভব করা অথবা রক্ত যাওয়া। এছাড়া এর সাথে পেটে ব্যথাও হতে পারে। এর ফলে কিডনিতেও সংক্রমণ হতে পারে। যেকারণে নিয়মিত প্রস্রাব পরীক্ষা করাতে হবে এবং এতে কোন রোগ-জীবাণু উপস্থিতি আছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে।

এপেন্ডাইসিটিস

গর্ভাবস্থায় এপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা নির্ণয় করা বেশ কঠিন। যেহেতু জরায়ু এসময় বড় হয়ে যায়, তাই এপেন্ডিক্স সরে গিয়ে নাভি বা লিভারের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। যেহেতু এটা নির্ণয় করা বেশ সমস্যাজনক, তাই সতর্ক থাকতে হবে। স্বাভাবিক লক্ষণ গুলো হচ্ছে খাবারে অরুচি, বমি।

পিত্তথলিতে পাথর

এই কারণেও পেটে ব্যথা হতে পারে। যাদের বয়স ৩৫ এর উপর এবং ওজন বেশি। এর ফলে সৃষ্ট ব্যথাকে মোটেই উপেক্ষা করা যাবে না এবং দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ব্যথা ছড়িয়ে পারতে পেটের সামনে থেকে পিঠের দিকেও। তাই সচেতন হওয়া জরুরি।

আপনার সাথেই আছে সুপারমম!

আমাদের কেয়ার লাইনে ফোন করে রবি থেকে বৃহস্পতিবার (সরকারী ছুটির দিন বাদে) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সুপারমম এর ডাক্তারদের সাথে সরাসরি পরামর্শ করতে পারেন মা ও শিশু বিষয়ক যেকোন সমস্যা নিয়ে আমাদের টোল ফ্রি নাম্বার ০৮-০০০-৮৮৮-০০০